Comet 500 mg | এর কাজ কী? ডায়াবেটিসের জন্য এটি কতটা কার্যকর জানুন

Comet 500 এর কাজ কি, কিভাবে এটি কাজ করে,সেবন করার নিয়ম,উপকারিতা,দাম ও কিছু সর্তকতা নিয়ে সাজানো এই প্রবন্ধ। আশাকরি আপনি যেহেতু কমেট ৫০০ মি.গ্রা. সম্পর্কে জানতেই ক্লিক করছেন, আপনাকে সঠিক তথ্য জাননোই আমাদের দায়িত্ব। কাজেই কমেট ৫০০ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ৫ মিনিট সময় বেশি দিয়েও সম্পূর্ণ পড়ার অনুরোধ রইলো।

সর্বপ্রথম জানতে হবে কমেট কিসের ঔষধ? Comet 500 mg হলো মেটফরমিন হাইড্রোক্লোরাইড (Metformin Hydrochloride) নামক সক্রিয় উপাদানযুক্ত একটি ওষুধ।

Comet 500 mg কিসের ঔষুধ?

এই ঔষুধ মূলত টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি বিগুয়ানাইড (Biguanide) গ্রুপের ওষুধের অন্তর্ভুক্ত। এই ঔষুধ রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ফলে টাইপ ২ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে থাকে। এক কথায় কমেট ৫০০ এর কাজ  টাইপ ২ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রয়ন রাখা। আশাকরি টাইপ ২ ডায়াবেটিস কি সেটা হয়তো জানেন। যদি না জানেন তাহলে ক্লিক করে জেনে নেওয়ার অনুরোধ রইলো। এতে করে আপনার ডায়াবেটিস কোন টাইপে আছে বুঝতে পারবেন। আর কোন টাইপের জন্য কি ঔষুধ সেটাও বুঝে সেবন করতে পারবেন।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখতে নিয়মিত ঔষুধ সেবন করার পাশাপাশি নিয়মিত ডায়াবেটিস পরিমাপ করুন। সকল ঔষুধ রেজিষ্টার ডাক্তারের পরামর্শে সেবন করুন। আপনি চাইলে ঔষুধ ছাড়াও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাকতে পারবেন শুধু মাত্র প্রাকৃতিক একটি ঔষুধ সেবন করে। যার কোনো পার্শ্বপ্রক্রিয়া নেই। আমার ঘরে এটি ব্যবহার করা হয়। এই ঔষুধ নিয়ে সবার নিচে বলা হয়েছে, আগ্রহ থাকলে পড়তে পারেন।

Comet 500 mg কার্যপ্রক্রিয়া?

কমেট মূলত তিনটি পদ্ধতিতে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে:

  1. গ্লুকোজ উৎপাদন কমানো – এটি লিভারে অতিরিক্ত গ্লুকোজ উৎপাদন কমিয়ে দেয়।
  2. ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি – শরীরের কোষ ইনসুলিন ভালোভাবে গ্রহণ করতে পারে, ফলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমে।
  3. গ্লুকোজ শোষণ হ্রাস – অন্ত্রে শর্করার শোষণ কমিয়ে দেয়, যা রক্তে অতিরিক্ত গ্লুকোজ প্রবাহ রোধ করে।

Comet 500 mg এর ব্যবহার

কমেট ৫০০ মূলত টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও:

  • পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS) এর চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে, বিশেষ করে যারা ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স সমস্যায় ভুগছেন।
  • ডায়াবেটিস প্রতিরোধে কিছু ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, বিশেষ করে যারা প্রিডায়াবেটিসে ভুগছেন।

Comet 500 mg খাওয়ার নিয়ম

Comet 500 mg সাধারণত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করা উচিত। তবে সাধারণ নির্দেশিকা হলো:

  • প্রাথমিক ডোজ: দিনে ১-২ বার, খাবারের আগে বা পরে গ্রহণ করা হয়।
  • সর্বোচ্চ ডোজ: প্রতিদিন ২০০০-২৫০০ মিগ্রা পর্যন্ত হতে পারে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।
  • পানি বা দুধের সাথে খেতে পারেন – এটি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমায়।

Comet 500 mg এর দাম ও কোথায় পাওয়া যাবে?

বর্তমান  সময়ে যেহেতু ডায়াবেটিস রোগী ঘরে ঘরে সেক্ষেত্রে কমেট ৫০০ সচারচর সব জায়গায় পাবেন। দাম নিয়ে বলতে গেলে কমেট ৫০০ এর বাজারমূল্য ব্র্যান্ড ও কোম্পানির উপর নির্ভর করে। তবে বর্তমানে এর বাজার মূল্য ১০টি ট্যাবলেট ৪০-৫০ টাকা। আবার আপনি চাইলে আরেকটু কম মূল্যে ঔষুধ কিনতে পারবেন অনলাইন থেকে।

  • Comet 500 mg (10 ট্যাবলেট) – ৪০-৫০ টাকা (বাংলাদেশে)।

অনলাইন ফার্মেসি: এটি ছাড়াও সকল ঔষুধ অনলাইনে পাওয়া যায়। নিচে এই সকল সাইট এর লিংক নিচে দেওয়া হলো। যেমনঃ

Comet 500 mg এর গ্রুপ ও অন্যান্য ব্র্যান্ড

কমেট ঔষুধ টি বিগুয়ানাইড গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত। এই গ্রুপের অন্যান্য জনপ্রিয় কোম্পানির ওষুধসমূহ:

  • Glucophage 500 mg – Merck
  • Metfor 500 mg – Incepta Pharmaceuticals
  • Diabetmin 500 mg – Square Pharmaceuticals
  • Glyciphage 500 mg – Sun Pharma

Comet 500 mg এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

যেকোনো ওষুধের মতো, Comet 500 mg-এরও কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে:

  • পেটে ব্যথা, গ্যাস ও বদহজম
  • বমিভাব বা ডায়রিয়া
  • অতিরিক্ত গ্রহণে ল্যাকটিক এসিডোসিস (Lactic Acidosis) হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, যা গুরুতর হতে পারে।
  • ভিটামিন B12-এর ঘাটতি হতে পারে দীর্ঘমেয়াদে ব্যবহারের ফলে।

সতর্কতা ও সাবধানতা

  • কিডনি ও লিভারের সমস্যা থাকলে সতর্কতার সাথে গ্রহণ করুন।
  • গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মা এটি গ্রহণের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
  • অ্যালকোহলের সাথে একসাথে গ্রহণ করা ঠিক নয়।

Comet 500 mg টাইপ ২ ডায়াবেটিস চিকিৎসায় একটি কার্যকর ওষুধ। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে, তবে সঠিক ডোজ এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করা উচিত। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও সতর্কতা সম্পর্কে জানা থাকলে এটি নিরাপদভাবে ব্যবহার করা সম্ভব।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে প্রাকৃতিক উপায়

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে কিছু প্রাকৃতিক উপায় সহায়ক হতে পারে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো কিছু ব্যবহার করা উচিত নয়। তবে, কিছু সাধারণ প্রাকৃতিক উপায় যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে:

  1. পাচনপ্রক্রিয়ায় সাহায্যকারী খাবার:
    • সিরা ও খেজুর: এই দুটি খাবার শরীরের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।
    • অলিভ অয়েল ও নারকেল তেল: এগুলি হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
  2. জামুন: জামুনের মধ্যে এক ধরনের রাসায়নিক উপাদান থাকে যা শরীরের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
  3. এলোভেরা: এলোভেরা রস ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে, এতে শরীরের শর্করা মাত্রা কমানোর ক্ষমতা রয়েছে।
  4. মেথি: মেথির বীজ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। প্রতিদিন ১ চামচ মেথি বীজ গরম পানিতে ভিজিয়ে খেলে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতে পারে।
  5. বাহার ফল (গুডি) ও নিমপাতা: নিমপাতা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে এবং এর পাতা শরীরের ইনসুলিন প্রক্রিয়া সাহায্য করে।
  6. ডাবের পানি: ডাবের পানি খেলে শরীরের পানির পরিমাণ বজায় থাকে এবং এটি ইনসুলিনের কার্যক্রমে সহায়ক হতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top