নখের কুনি দূর করার ঔষধের নাম ও ঘরোয়া উপায় নিয়ে আজকের এই আর্টিকেল সাজানো হয়েছে। আপনি যদি এই সমস্যায় পড়েন তাহলে অবশ্যই এই আর্টিকেলটি আপনার সমাধান হতে পারে। তাই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
নখ হলো মানুষের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি কেরাটিন নামক এক প্রকার প্রোটিন দিয়ে তৈরি। নখ যেহেতু মানুষের শরীরের একটি অংশ তাই এটিরও যত্নের প্রয়োজন। আমাদের বিভিন্ন দোষের কারনেই নখেরর নানান সমস্যা সৃষ্টি করি যা পরবর্তীতে অনেক যন্ত্রনা দায়ক হয়। আমরা অনেকে নখ পরিষ্কার রাখি না যার কারনে বিভিন্ন রকম সংক্রামক রোগ সৃষ্টি হয়। তার মধ্যে একটি হচ্ছে কুনি উটা।
নিচে নখের কুনি দূর করার ঔষধের নাম ও ঘরোয়া উপায় ও নখের যত্ন এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কথা বলা যাক:
সুরক্ষা প্রদান: নখ আঙুলের মাথার আঘাত ও ক্ষত থেকে রক্ষা করে। সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি: নখ আঙুলের ডগায় চাপ ও স্পর্শ অনুভব করতে সাহায্য করে। কাজের সুবিধা: ছোটখাটো কাজ করার সময় নখ বেশ উপযোগী। কাজেই নিয়মিত নখ কাঁটা ও নখের যত্ন নিতে ভুল যেনো না হয়।
কিভাবে নখ ভালো রাখা যায়,তা আমাদের জানা অতি জরুরি। নিচে নখ ভালো রাখার কয়েকটি টিপস বলছি:
নখের ভালো রাখার টিপস:
- পরিষ্কার রাখা: নখ পরিষ্কার রাখা খুবই জরুরি। নখে ময়লা জমতে না দেওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
- নিয়মিত কাঁটা: নখ বড় হয়ে গেলে কেঁটে নেওয়া উচিত, যাতে তা ভেঙে না যায় বা ময়লা জমে না।
- ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার: হাত এবং নখ শুকিয়ে গেলে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।
- খাদ্যাভ্যাস: নখ ভালো রাখতে ভিটামিন-সি, বায়োটিন, ক্যালসিয়াম, এবং আয়রনযুক্ত খাবার খেতে হবে।
নখের স্বাস্থ্য কেমন:
- নখের সাদা দাগ: ভিটামিন বা ক্যালসিয়ামের অভাবের লক্ষণ হতে পারে।
- ফাটা নখ: শুষ্কতা বা কেরাটিনের ঘাটতি নির্দেশ করে।
- পীতাভ নখ: সংক্রমণ বা স্বাস্থ্য সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।
- বর্ণ পরিবর্তন: এটি ফাঙ্গাল ইনফেকশন বা অন্য কোনো রোগের লক্ষণ হতে পারে।
নখের কুনি দূর করার ঔষধের নাম ও ঘরোয়া উপায়
নখের কুনি একটি প্রচলিত সমস্যা যা বেশিরভাগ সময় ব্যথা এবং অস্বস্তির কারণ হয়। এটি সাধারণত নখের চারপাশে সংক্রমণের ফলে হয়। নখের কুনি দূর করার ঔষধের নাম ও ঘরোয়া উপায় ব্যবহার করা যায়। সর্ব প্রথম আমাদের জানতে হবে নখে কেনো কুনি হয়। তারপর আমাদের এটি হতে মুক্তির কথা চিন্তা করতে হবে।
নখের কুনি কেনো হয়?
আমাদের দৈনন্দিন কাজের বা আমাদের বিভিন্ন অভ্যাসের কারণেই নখের কুনি হয়। নখের কুনি সাধারণত নখের চারপাশে ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাল সংক্রমণের কারণে হয়। নখের কুনি কেনো হয় এর থেকে বাচার উপায় কি তা জানতে মনোযোগ দিন। নখের কুনি হওয়ার প্রধান কারণগুলো হলো:
নখের কুনি দূর করার ঔষধের নাম:
১. আঘাত প্রাপ্ত হওয়া:
- নখ কাটার সময় আঘাত লাগা বা ভুল পদ্ধতিতে নখ কাটা অথবা অন্য কোনো কারণে আঘাত প্রাপ্ত হলে।
২. নখ কামড়ানো:
- আমাদের অনেকের নখ কামড়ানোর অভ্যাস আছে। নখ কামড়ানোর জন্য নখের কুনি হতে পারে। কারণ নখ কামড়ানোর ফলে নখের চারপাশের ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা সংক্রমণের সুযোগ সৃষ্টি করে।
৩. অস্বাস্থ্যকর নখের যত্ন:
- আমরা অনেকে নানান অপরিষ্কার জায়গায় কাজ করতে হয়। কাজ শেষে নখ পরিষ্কার না রাখা ফলে বিভিন্ন জীবানুতে নখ সংক্রমণ হতে পারে।
৪. অতিরিক্ত আর্দ্রতা:
- নখ দীর্ঘ সময় পানিতে ভিজে থাকলে ফাঙ্গাল সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
৫. ইমিউন সিস্টেম দুর্বলতা:
- শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে নখের সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
নখের কুনির হলে করনীয়:
নখে কুনি হলে আমাদের অবশ্যই কিছু রুলস ফলো করতে হবে নয়তো এর সংক্রামক আরও ভয়াবহ হতে পারে। কাজেই আমাদের উচিত হবে কিছু টিপস জেনে নিয়ে সেটা ফলো করা। যদি আপনার কুনি হয় তাহলে অবশ্যই আমাদের:
- নিয়মিত নখ ছোট করা ও পরিষ্কার রাখা।
- নখ কাটার সময় সতর্কতা অবলম্বন করা যাতে কোনো আঘাত না লাগে।
- সংক্রমণ হলে নখের চারপাশে খোঁচাখুঁচি করা এড়িয়ে চলুন।
- হাত কিংবা পা ধোয়ার পরে ভালোভাবে পানি শুকিয়ে নিন।
- বেশি সমস্যা হলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ নিন।
আপনি চাইলে মাত্র ২০ টাকা দিয়ে অনেক বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখাতে পারবেন। যদি দেখাতে চান বা বিস্তারিত জানতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটি পড়তে ক্লিক করুন।
নখের কুনি দূর করার ঔষধের নাম
উপরে থেকে অবশ্যই ধারণা পেয়েছেন যে নখের কুনি কেনো হয়। তারপরও যদি আপনার নখে কুান হয় তাহলে কুন দুর করার কিছু ঔষধ বলতে ক্রিম রয়েছে যা আক্রান্ত স্থানে লাগাতে পারেন। এর পাশাপাশি যদি আপনি কিছু ঘরোয়া টিপস ফলো করেন তাহলে দ্রুত আপনার কুনি দূর হতে পারে। নিচে কিছু ক্রিম ও ঘরোয়া টিপস সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়েছে।
- Mupirocin Ointment: মুপিরোসিন অয়েন্টমেন্ট একটি অ্যান্টিবায়োটিক মলম যা ত্বকের সংক্রমণ দূর করতে কার্যকর। নখের কুনির সংক্রমিত স্থানে এটি ব্যবহার করলে দ্রুত আরাম পাওয়া যায়।
- Fusidic Acid Cream: ফুসিডিক অ্যাসিড ক্রিম সংক্রমিত ত্বকে ব্যাকটেরিয়া নিয়ন্ত্রণে এটি খুব কার্যকর। দিনে দুইবার ব্যবহার করুন।
- Clotrimazole Cream: ক্লোট্রিমাজল ক্রিম যদি সংক্রমণ ফাঙ্গাল হয়, তাহলে ক্লোট্রিমাজল ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। এটি ত্বকের ফাঙ্গাল ইনফেকশন দূর করতে সাহায্য করে।
- Antiseptic Solution: অ্যান্টিসেপটিক দ্রবণ সংক্রমিত অংশ পরিষ্কার করতে হেক্সিসল বা ডেটল ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি জীবাণু ধ্বংস করতে সহায়ক।
- ব্যথা নাশক ট্যাবলেট: প্যারাসিটামল যদি সংক্রমণের কারণে ব্যথা বা ফোলাভাব হয়, তাহলে প্যারাসিটামল গ্রহণ করে আরাম পেতে পারেন। তবে দীর্ঘদিন ব্যথা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
নখের কুনি দূর করার ঔষধের নাম ঘরোয়া উপায়
উপর থেকে কিছু ক্রিম এর ধারনা পেয়েছেন তারই পাশাপাশি আপনি যদি নিচের ঘরোয়া টিপস গুলো ফলো করেন আল্লাহর রহমতে দ্রুতে আপনার নখের কুনি দূর হয়ে যাবে। নখের কুনি দূর করার ঔষধের নাম এর পাশাপাশি নিচের কাজেই নিচের টিপস গুলো ভালোভাবে ফলো করুন।
১. গরম পানির সেঁক:
- একটি পাত্রে গরম পানি নিন এবং তাতে লবণ মিশিয়ে নিন।
- সংক্রমিত আঙুলটি ১০-১৫ মিনিট পানিতে ডুবিয়ে রাখুন।
- এটি রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করে।
২. নারকেল তেল এবং লবঙ্গের তেল:
- নারকেল তেলে কয়েক ফোঁটা লবঙ্গ তেল মিশিয়ে সংক্রমিত স্থানে লাগান।
- এটি অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল উপাদান সরবরাহ করে।
৩. লেবু এবং লবণ:
- একটি তাজা লেবু কেটে তার রস বের করুন।
- তাতে একটু লবণ মিশিয়ে সংক্রমিত স্থানে লাগান।
- এটি ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করবে।
৪. রসুন:
- রসুনে প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক গুণ রয়েছে। একটি রসুন পেস্ট তৈরি করে সংক্রমিত স্থানে লাগিয়ে রাখুন।
- এটি দ্রুত আরাম এনে দিতে পারে।
৫. অ্যালোভেরা জেল:
- অ্যালোভেরা জেল সংক্রমিত অংশে লাগিয়ে রাখুন।
- এটি ত্বকের শীতলতা বজায় রাখে এবং ক্ষতস্থানে আরাম দেয়।ৎ
নখের কুনি দূর করার ঔষধের নাম ও ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ধারণা পেয়েছেন। নখের কুনি দূর করার ঔষধের নাম ছাড়াও আমাদের আরও অনেক গুরত্বপূর্ণ আর্টিকেল রয়েছে সেগুলো ভিজিট করে কিছৃ ধারণা অর্জন করতে পারেন।
ধন্যবাদ।