বাচ্চার ওজন কত হলে নরমাল ডেলিভারি হয় (10টি গুরুত্বপূর্ণ টিপস)

বাচ্চার ওজন কত হলে নরমাল ডেলিভারি হয় এটা জানা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। প্রিয় পাঠক আমা করি আপনি নরমার ডেলিভারি করতে আগ্রহ কাজেই আপনি এই আর্টিকেলটি পড়তেছেন। আজকের এই আর্টিকেল টি যদি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়েন ইনশা আল্লাহ আমি দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে বলতে পারি আপনার অনেক কাজে আসবে। বর্তমান সময়ের ডাক্তারদের মতামত ও আমার ব্যক্তিগত কিছু অভিজ্ঞতা থেকেই এই আর্টিকেল টি লেখা হয়েছে।

আপনারা জানেন যে নরমাল ডেলিভারির জন্য বাচ্চার আর্দশ ওজন অনেক গুরুত্বপূর্ণ । কারণ বাচ্চার ওজন বেশি হরে তা আর নরমার ডেলিভারির সীমার মধ্যে থাকে না, আর না থাকার অনেক কারণ আছে। নিচে ধাপে ধাপে বাচ্চার আদর্শ ওজন সহ নরমাল ডেলিভারির পূর্ব প্রস্তুতি ও কিছু সর্তকতা ও আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করা হয়েছে।

বাচ্চার ওজন কত হলে নরমাল ডেলিভারি হয়?

নরমাল ডেলিভারি একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া যেখানে প্রসব নির্ধারিত সময়ে এবং জটিলতা ছাড়াই হয়। বাচ্চার ওজন নরমাল ডেলিভারির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই আর্টিকেলে আমরা জানব, বাচ্চার আদর্শ ওজন কত হলে নরমাল ডেলিভারি সম্ভব এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য তথ্য।

গড়ে, একটি পূর্ণ মেয়াদে জন্ম নেওয়া শিশুর ওজন সাধারণত ২.৫ থেকে ৪ কেজি (৫.৫ থেকে ৮.৮ পাউন্ড) হয়। এই সীমার মধ্যে বাচ্চার ওজন থাকলে নরমাল ডেলিভারি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যদি বাচ্চার ওজন ২.৫ কেজির কম হয়, তবে তা জন্মকালীন ওজনের ঘাটতি (low birth weight) হিসেবে ধরা হয়। অন্যদিকে, যদি বাচ্চার ওজন ৪ কেজির বেশি হয়, তবে তাকে ম্যাক্রোসোমিয়া (macrosomia) বলা হয়, যা প্রসবের জটিলতা বাড়াতে পারে।

নবজাতকের আদর্শ ওজন ২.৫ থেকে ৪ কেজি

বাচ্চার ওজন কীভাবে প্রভাব ফেলে নরমাল ডেলিভারিতে?

১. কম ওজন (Low Birth Weight):

  • যেসব বাচ্চার ওজন ২.৫ কেজির কম, তাদের জন্মের সময় কম জটিলতা হতে পারে কারণ বাচ্চা ছোট হওয়ার কারণে প্রসবপথ দিয়ে বের হতে সহজ হয়। তবে, এই ক্ষেত্রে বাচ্চার স্বাস্থ্যের অন্যান্য ঝুঁকি থাকে।

২. আদর্শ ওজন:

  • ২.৫ থেকে ৪ কেজির মধ্যে ওজন হলে নরমাল ডেলিভারি বেশিরভাগ সময় সহজ হয়। এই সীমার মধ্যে থাকা শিশুদের স্বাস্থ্যও সাধারণত ভালো থাকে।

৩. অতিরিক্ত ওজন (Macrosomia):

  • বাচ্চার ওজন ৪ কেজির বেশি হলে প্রসব কঠিন হতে পারে। বড় বাচ্চা প্রসবের সময় মায়ের প্রসবপথে আটকে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়, যা সিজারিয়ানের প্রয়োজন হতে পারে।

কীভাবে বাচ্চার ওজন নির্ধারণ করা হয়?

গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসাউন্ড এবং অন্যান্য পরীক্ষার মাধ্যমে বাচ্চার ওজন সম্পর্কে অনুমান করা যায়। ডাক্তারেরা বাচ্চার মাথার ব্যাস, পেটের আকার এবং হাড়ের দৈর্ঘ্য দেখে ওজন নির্ধারণ করেন।

নরমাল ডেলিভারির জন্য বাচ্চার ওজন ছাড়াও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

  • মায়ের শারীরিক অবস্থা: মায়ের শারীরিক স্বাস্থ্য এবং পেলভিসের গঠন নরমাল ডেলিভারির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
  • গর্ভাবস্থার সময়কাল: পূর্ণ মেয়াদে (৩৭ থেকে ৪০ সপ্তাহ) গর্ভধারণ শেষ হলে নরমাল ডেলিভারির সম্ভাবনা বেশি।
  • ডাক্তারের অভিজ্ঞতা: একজন দক্ষ ডাক্তার ও পরিচর্যার দল নরমাল ডেলিভারিকে সফল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

নরমাল ডেলিভারি সহজ করতে করণীয়

১. সুষম খাদ্য গ্রহণ: গর্ভাবস্থায় পুষ্টিকর খাবার যেমন শাকসবজি, ফলমূল, প্রোটিন এবং পর্যাপ্ত পানি পান করা বাচ্চার স্বাস্থ্যকর ওজন নিশ্চিত করে।

২. ব্যায়াম: গর্ভাবস্থায় নিয়মিত হালকা ব্যায়াম, যেমন হাঁটা বা যোগব্যায়াম, নরমাল ডেলিভারির সম্ভাবনা বাড়ায়।

৩. নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ: গর্ভাবস্থার সময় নিয়মিত চেকআপ করলে বাচ্চার ওজন ও স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন থাকা যায়।

বাচ্চার ওজন নরমাল ডেলিভারির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে, ওজন ছাড়াও মায়ের শারীরিক অবস্থা, গর্ভাবস্থার সঠিক পরিচর্যা এবং অভিজ্ঞ ডাক্তারের সাহায্য নরমাল ডেলিভারির সম্ভাবনাকে বাড়ায়। গর্ভাবস্থায় নিয়মিত চেকআপ এবং পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে বাচ্চার স্বাস্থ্যকর ওজন নিশ্চিত করা সম্ভব।

নরমাল ডেলিভারি নিয়ে আমার কিছু ব্যক্তিগত মতামত

আমি এখন যে মতামত বলতেছি তা সম্পূর্ণ আমার ব্যক্তিগত। আপনার ভালো লাগলে মানবেন নয়তো মানার কোনো প্রয়োজন নেই। গর্ভাবস্থার শুরু থেকে যতটুকু সম্ভব ডাক্তার এর কাছে না যাাওয়া। বার বার চেক না করানো। চেক আপের নামে বিভিন্ন অতিরিক্ত ঔষধ দিয়ে বাচ্চার ওজন বাড়িয়ে নরমাল ডেলিভারিতে সরে যাবেন না। চেকআপ করাইচেন ভারো কথা কিন্তু ডাক্তার বিভিন্ন সমস্যা দেকিয়ে আপনাকে বিভিন্ন ঔষধ দিবে যা আপনার বাচ্চাকে তার নির্দিষ্ট সময়ের আগে বড় করে তোলে। যার কারণেই অনেক মায়েদের নরমাল ডেলিভারির আগ্রহ অনেক বেশি থাকার ফলেও সিজার করতে আপনি বাধ্য। অতিরিক্ত ঔষধ এমন পর্যায় নিয়ে যায় যে আপনি সিজার না করলে আপনাকেও বাচানো সম্ভব হয় না। কিন্তু আপনি একটু পিছনে তাকালে দেখতে পারবেন আপনার জন্মও হয়েছে নরমালে।

তাহলে কেনো আপনার সিজার করা বাধ্যতামূলক?? নরামল ডেরিভারি করাতে হরে সর্বপ্রথম যেটা সেটা হচ্ছে আপনাকে অটুট থাকতে হবে এই সিদ্ধান্তের উপর। তারপর আপনাকে আয়রন ও ক্যালসিয়াম ঔষধ ব্যতিত কোনো ঔষধ গ্রহন করা যাবে না। ব্যায়াম না করে ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করুন তারই পাশাপাশি অর্থ সহকারে আল-কোরআন তিলাওয়াত করুন। আপনার মাথায় থাকতে হবে যে নরমাল ডেরিভারি করতে গিয়ে আপনার মৃত্যু হলেও আপনি ইসলামের অনেক উপরের মর্যাদা পাবেন,শহীদের মর্যদা পাবেন যেটা অন্য উপায়ে অর্জন করতে অনেক কষ্ঠের। তাহলে ভয় না পেয়ে অটুট থাকুন নরমাল ডেলিভারিতে।

নিয়মিত সামর্থের ভিতর যতুটুকু পুষ্টি সমৃদ খাবার খাওয়া যায়। আমি বলবো বেশি করে ভালো খেজুর,মধু,বাদাম খান ইনশা আল্লাহ আর কিছূ লাগবে না। পাশাপাশি ক্যালসিয়াম ও আয়রন ঔষুধ খান। ইনশা আল্লাহ আমার ব্যক্তিগত বলছি আপনার গর্ভের বাচ্চার জন্য এর থেকে বেশি কোনো কিছু খাওয়া লাগবে না। ৭ম/৮ম মাসের দিকে শুধু চেক আপ করে বাচ্চার ওজন সম্পর্কে জেনে নিবেন। যদি দেখেন যে আদর্শ ওজন থেকে বেশি তাহলে বাড়তি খাবারগুলো বন্ধ করে দিবেন। আর যদি কম হয় তাহলে কোনো চিন্তা করবেন না আপনার ডেলিভারির সময় আসার আগ পর্যন্ত তা ঠিক হয়ে যাবে। ওজন কম বরে ভয় পেয়ে ভুলেও ডাক্তারের দেওয়া ঔষুধ সেবন করবেন না।

চেকআপের পাশাপাশি আপনার ব্লাডের পরিমান টাও জেনে নিবেন। তাহলে ব্লাড কম হলে প্রয়োজনীয় গ্রুপ আগে থেকে খুজ করে রাখতে পারবেন। প্রয়োজনে আপনি আপনার আসে পাশের যাদের নরমালে ডেলিভারি হয়েছে তাদের কাছ থেকে অভিজ্ঞা জেনে নিতে পারেন।

সিজার পরিহার করুন কারণ সিজার করা মানে আপনার পুরো শরীরকে দুই ভাগ করে ফেলা। যদি বিশ্বাস না হয় তাহলে পাশে কোনো সিজার করা মহিলাকে এক বাল্টি পানি তুলতে বইলেন।

এগুলা একবারেই আমার ব্যক্তিগত মতামত ও অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। মানা না মানা আপনার একান্ত্য ব্যপার। আপনার যেকোনো বিষয়ে অনলাইনে এই অ্যাপ রেজিষ্টেশন করে অভিজ্ঞ ডাক্তারদের সাথে আলোচনা করতে পারবেন। বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন।

ধন্যবাদ”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top