মাসিক মিস হওয়ার কত দিন পর প্রেগন্যান্ট বোঝা যায় তা বিস্তারিত জানতে মনোযোগ দিয়ে পুরো আর্টিকেল পড়ুন। কারণ এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কারণ অনেকে অপেক্ষায় থাকেন মা হওয়ার বাবা হওয়ার তাই এই বিষয়টা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
প্রেগন্যান্সি টেস্ট করার ক্ষেত্রে অনেক সাবধানতা ও সঠিক দিকনির্দেশনা থাকা আবশ্যক। কারণ তা সঠিক জানা না থাকলে সঠিক ফলাফল পাওয়া যাবে না।
মাসিক মিস হওয়ার কত দিন পর প্রেগন্যান্ট বোঝা যায়?
মাসিক মিস হওয়ার পর সাধারণত ৭-১০ দিনের মধ্যে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করলে সঠিক ফলাফল পাওয়া যায়। এই সময়ে শরীরে হিউম্যান কোরিওনিক গনাডোট্রোপিন (hCG) হরমোনের মাত্রা বাড়তে শুরু করে, যা গর্ভাবস্থার লক্ষণ। প্রেগন্যান্সি টেস্ট করার আগে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি। এর মাধ্যমে পরীক্ষার ফলাফল আরও নির্ভরযোগ্য হতে পারে।
মাসিক মিস হওয়ার পর অপেক্ষা করুন কারণ মাসিক মিস হলেও যে আপনি মা হতে চলেছেন না কিন্তু মুটেও নয় কারণ মাসিক অনেক কারণে বন্ধ হয়ে থাকে। আবার পুনরায় মাসিক চক্র শুরুও হয় তাইতো মাসিক বন্ধ হলেও খুশি কিংবা চিন্তায় পড়ার কোনো কারণ নেই। আপনি যদি মা হতে অধির আগ্রহে থাকেন তাহলে আপনার জন্য উচিত হবে মাসিক মিস হলেও আর ১০ দিন অপেক্ষা করা। কারণ অনেক সময় দেখা যায় মাসিক মিস হয় কিন্তু তার কারণ গর্ভবতী নয় অন্যান্য সমস্যা। তাই মাসিক মিস হওয়ার ১০ দিন পর টেস্ট করলে ইন শাহ আল্লাহ্ ভালো ফল পাবেন। কেননা, hCG হরমোনের মাত্রা সময়ের সঙ্গে বাড়ে এবং টেস্টে সঠিক ফলাফল আসে।
প্রেগন্যান্সি টেস্ট করার আগে যা যা মনোযোগ দিতে হবে:
টেস্ট করার আগে অবশ্যই আপনার অনেক বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে,কারণ নিয়ম না মেনে টেস্ট করলে সঠিক ফলাফল পাওয়ার আশা খুবই কম। তাই নিচের দেওয়া কিছু নিয়ম অবশ্যই মনোযোগ দিবেন।
সকাল বেলা টেস্ট করুন:
- প্রথম প্রস্থানের মূত্রে hCG-এর মাত্রা বেশি থাকে।
- তাই সকালের প্রথম প্রস্থানের মূত্রে টেস্ট করা উচিত।
প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট সঠিকভাবে ব্যবহার করুন:
- কিটের নির্দেশাবলী ভালো করে পড়ে এবং নিয়মিতভাবে অনুসরণ করুন।
- যদি টেস্ট সঠিকভাবে না করা হয়, তবে ফলাফল ভুল হতে পারে।
মূত্রে কনট্যামিনেশন এড়ান:
- কোনো ধরণের সাবান বা প্রসাধনী যেন মূত্রে না আসে, তা নিশ্চিত করুন।
প্রতিকূল ওষুধ এড়িয়ে চলুন:
- কিছু ওষুধ প্রেগন্যান্সি টেস্টের ফলাফলে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
- যদি ওষুধ সেবন করেন, তাহলে টেস্টের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
পুনরায় টেস্ট করুন যদি ফলাফল সন্দেহজনক হয়:
- কখনো যদি ফলাফল ধোঁয়াশা বা সন্দেহজনক মনে হয়, তাহলে ৭-১০ দিন পর আবার টেস্ট করুন।
ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার প্রস্তুতি:
- যদি প্রেগন্যান্সি টেস্ট পজিটিভ আসে, তাহলে ডাক্তারের কাছে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
- গাইনোকোলজিস্টের পরামর্শের মাধ্যমে প্রেগন্যান্সির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান।
যখন টেস্টে পজিটিভ ফলাফল আসে:
- স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করুন।
- সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন।
- নিয়মিত চেকআপ করান।
কিভাবে নিশ্চিত হবেন:
- গৃহে প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট:
- মাসিক মিস হওয়ার ৭ দিন পরই ব্যবহার করা যায়।
- সকালে প্রথম মূত্রে পরীক্ষা করলে সঠিক ফলাফল পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
- রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে:
রক্তে hCG হরমোনের উপস্থিতি পরীক্ষা করতে পারেন। এটি আরও সঠিক ফলাফল দিতে পারে এবং মাসিক মিস হওয়ার আগেই কখনও কখনও প্রেগন্যান্সি শনাক্ত করতে পারে।
লক্ষণ যা প্রেগন্যান্সির ইঙ্গিত দিতে পারে
আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন তাহলে আপনার শরীরে অনেক রকমের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। আর এই সকল লক্ষণ সবার বেলা সমান হয় না,কারো ২াট আবার কারো ১টি আবার কারো সবটি দেখা দিতে পারে এতে করে চিন্তার কোনো কারণ নেই। আবার এই সকল লক্ষণ দেখে বিপরীত ও চিন্তা করার দরকার নেই। কারণ এই লক্ষণ গুলো আপনার মা হবার জন্য আবাস দিচ্ছে।
মা হওয়ার আগে, অর্থাৎ গর্ভাবস্থার প্রাথমিক পর্যায়ে, নারীরা কিছু সাধারণ লক্ষণ অনুভব করেন। এগুলো গর্ভধারণের সম্ভাব্য ইঙ্গিত দিতে পারে। তবে এই লক্ষণগুলো প্রত্যেকের ক্ষেত্রে একরকম নাও হতে পারে।নিচে মা হবার আগের কিছু প্রাথমিক লক্ষণ সমূহ দেওয়া হলো-
- মাসিক মিস হওয়া:
- গর্ভাবস্থার সবচেয়ে সাধারণ এবং প্রথম লক্ষণ।
- বমি ভাব (Morning Sickness):
- সকালবেলা বমি বমি ভাব বা বমি হতে পারে।
- এটি প্রথম কয়েক সপ্তাহের মধ্যে অনুভূত হয়।
- স্তন ফুলে যাওয়া ও সংবেদনশীলতা:
- স্তন ফুলে যাওয়া এবং স্পর্শে ব্যথা অনুভব করা।
- স্তনের চারপাশে (এরিওলা) রঙ গাঢ় হয়ে যেতে পারে।
- ক্লান্তি:
- শরীরে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে প্রচণ্ড ক্লান্তি অনুভব হতে পারে।
- প্রস্রাবের তাগিদ বৃদ্ধি:
- প্রস্রাবের পরিমাণ বা তাগিদ বেড়ে যেতে পারে।
- মেজাজের পরিবর্তন:
- হরমোন পরিবর্তনের কারণে মন খারাপ, আনন্দ বা উদ্বেগের মতো মেজাজের পরিবর্তন হতে পারে।
- খাদ্য পছন্দে পরিবর্তন:
- কিছু খাবারের প্রতি আকর্ষণ বাড়তে পারে বা কিছু খাবারের গন্ধ সহ্য না হওয়ার অনুভূতি হতে পারে।
- অল্প রক্তপাত বা ক্র্যাম্প (Implantation Bleeding):
- গর্ভের ভ্রূণ জরায়ুতে স্থাপিত হওয়ার সময় হালকা রক্তপাত হতে পারে।
- শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি:
- বেসাল বডি টেম্পারেচার (BBT) সামান্য বেড়ে থাকতে পারে।
- হালকা মাথা ঘোরা:
-
- রক্তচাপ কমে যাওয়া বা রক্ত প্রবাহ বাড়ার কারণে মাথা ঘোরা বা দুর্বলতা অনুভব হতে পারে।
তারপরও আপনার যদি সন্দেহ থাকে, একজন গাইনোকোলজিস্টের সাথে পরামর্শ করে ব্লাড টেস্ট করতে পারেন তাহলে আর রিপট ভুল হবার কিংবা সন্দেহ থাকার আসংখ্যা থাকবে না।